পল্লীবিদ্যুৎকে দায়ী করছে বনবিভাগ

বৈদ্যুতিক ফাঁদে উখিয়ায় বন্যহাতি নিধন

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৯/১১/২০২৫ ৮:০৩ এএম , আপডেট: ১৯/১১/২০২৫ ৮:০৭ এএম

কক্সবাজারের উখিয়ায় আবারো বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম খয়রাতিপাড়ায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল সংলগ্ন কৃষিজমিতে নিথর অবস্থায় একটি হাতি মৃত অবস্থা পড়ে থাকতে দেখতে পান স্থানীয়রা।

পরে ঘটনাস্থলে বনবিভাগ ও প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত হন, সংগ্রহ করা হয় মরদেহের নমুনা।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিট কর্মকর্তা এমদাদুল হাসান রনি বলেন, ‘ প্রাথমিক ভাবে কৃষিজমির চারপাশে আগে থেকে পাতানো বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকে পড়ে শকসার্কিটের কারণে হাতিটির মৃত্যু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন, ফরেনসিকে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি এলাকা ও জনবসতির সীমান্তে সম্প্রতি বন্য হাতির চলাচল বেড়ে যাওয়ায় কিছু অসাধু ব্যক্তি ফসল রক্ষার নামে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ‘বৈদ্যুতিক ফাঁদ’ ব্যবহার করছেন। এতে প্রতিনিয়ত বন্যপ্রাণী ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

উখিয়ার স্কুল শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, ‘ টাকার বিনিময়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ চালু রেখে একটি চক্র হাতি নিধন করছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা জরুরি, পদক্ষেপ না নিলে এখানে কোন হাতি আর অবশিষ্ট থাকবে না। ‘

মাত্র ৩ মাস আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর একইভাবে বৈদ্যুতিক ফাঁদের কারণে উখিয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আরো একটি হাতির মৃত্যু হয়েছিল।

এঘটনার পুনরাবৃত্তির কারণে উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধের অনীহাকে দায়ী করেছেন বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান।

তিনি বলেন, ‘ সংরক্ষিত বনের জায়গায় অবৈধভাবে চালু থাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করতে পল্লীবিদ্যুৎকে বারবার চিঠি দিয়েও কোন সাড়া মেলেনি। তারা পদক্ষেপ নিলে বৈদ্যুতিক ফাঁদ তৈরি অসম্ভব কিন্তু এক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

এই রেঞ্জ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ রোহিঙ্গা সংকটের কারণে আবাসস্থলে ক্যাম্প তৈরি হওয়ায় হাতিরা লোকালয়ে আসতে বাধ্য হয়৷ এমনিতেই হাতির করিডর এখন সংকটাপন্ন তার উপর মানবসৃষ্ট বৈদ্যুতিক ফাঁদ জীববৈচিত্র‍্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে।’

বনকর্মকর্তার অভিযোগ প্রসঙ্গে উখিয়া পল্লীবিদ্যুৎ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) কাইজার নুর বলেন, ‘ ২০২২ সালে শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কিছু সংযোগ পৌঁছেছে। আমরা বনবিভাগের চিঠি পেয়েছি, কিন্তু একার পক্ষে আমাদের ব্যবস্থাগ্রহণ সম্ভব নয়। শীঘ্রই যৌথ অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’

একটা সময় উখিয়া-টেকনাফের অভয়ারণ্য ছিলো হাতির পালের পদচারণায় মুখরিত, কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট সহ নানা কারণে বর্তমানে এশিয়ান বন্যহাতির অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে এই অঞ্চলে।

পরিবেশবিদরা মনে করছেন, এখনই যুগোপযোগী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে সংকটাপন্ন প্রাণী বন্যহাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং সামগ্রিক অর্থে এই প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রকৃতি ও পরিবেশ

পাঠকের মতামত

টেকনাফে বাজার সমুহে যানজটমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান জোরদারের দাবী

টেকনাফের বিভিন্ন বাজার সমূহে প্রতিনিয়ত যানজটে জনজীবন অতীষ্ট হয়ে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। যানজটের জন্য ব্যবসায়ীসহ ...

সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন উখিয়ার ডাঃ এ.এইচ. সুমন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সদ্য প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-পেডিক) ডাঃ ...

উপকূলের ম্যানগ্রোভে বিশ্বস্বীকৃতি—দ্য আর্থশট প্রাইজ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার ‘দি আর্থশট প্রাইজ ২০২৫’ জিতেছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। ...

রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি : নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আসামি চসিকের কর্মচারীও

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে এটি ব্যবহার ...